যেকোনো দেশের জাতীয় প্রতিরক্ষার অন্যতম কার্যকর হাতিয়ার হলো গোয়েন্দা সংস্থা। ল্যবস্তুকে গুঁড়িয়ে দিতে আগ্রাসী গুপ্তচরবৃত্তি প্রাথমিক অস্ত্র। তবে কোন গোয়েন্দা সংস্থা কী কাজ করছে বা তাদের ভেতরের অবস্থা কেমন, সেটা জানা সহজ নয়। সেরা গোয়েন্দা সংস্থা নির্ধারণ করা আসলেই খুবই কঠিন কাজ। এসব সংস্থার প্রকৃতি এমনই যে তাদের সাফল্য অর্থাৎ বছরের পর বছর তাদের কার্যক্রম লোকচুর অন্তরালেই থাকবে। তাদের ব্যর্থতা কিংবা বিতর্কিত কার্যক্রমই মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। এটা একটা ধন্যবাদশূন্য কাজ। তারপরও যতটুকু জানা যায়, তার আলোকে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার দতা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে বলে নেয়া ভালো, সবটাই অপূর্ণাঙ্গ তথ্যের ভিত্তিতে।
বিএনডি (জার্মানি)
প্রতিষ্ঠা : ১ এপ্রিল, ১৯৫৬, জনশক্তি : ৬,০৫০। এজেন্সি নির্বাহী : গেহলেন অরগানাইজেশন। প্যারেন্ট এজেন্সি : সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স গ্র“প
জার্মানির বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম বুন্দেসন্যাচরিচটেনডিয়েনস্ট। একে নিয়ন্ত্রণ করে চ্যান্সেলরের অফিস। বিদেশে জার্মান স্বার্থের প্রতি হুমকির ব্যাপারে তারা সরকারকে আগাম সতর্ক করার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। টেলিফোনে আড়িপাতা ও ইলেকট্রনিক পর্যবেণের মাধ্যমে তারা কাজ করে। তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, ডব্লিউএমডি বিস্তার, প্রযুক্তির সব ধরনের অবৈধ হস্তান্তর, সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ, অস্ত্র ও মাদক পাচার, মানি লন্ডারিং, অবৈধ অভিবাসন ও তথ্য যুদ্ধের মতো বিভিন্ন েেত্র কাজ করে। তারা বৈদেশিক গুপ্তচরবৃত্তিতে জার্মানির একমাত্র গোয়েন্দা সংস্থা হওয়ায় সামরিক ও বেসামরিক উভয় ধরনের গুপ্তচরবৃত্তিতেই নিয়োজিত থাকে।
জার্মানির নামী সংবাদ সাময়িকী Der Spiegel জানায় যে, পত্রিকাটির সাংবাদিকদের ওপর গোয়েন্দাগিরি করে সাংবাদিকরা- যাঁদেরকে রিক্রুট করে জার্মনির ফেডারেল গুপ্তচর সংস্থা- BND ৷ খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর জার্মানিতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয় ৷ কিন্তু তা সত্বেও বার্লিন সরকার সংস্থার বর্তমান প্রধান
Ernst Uhrlau এবং তাঁর পূর্বসূরী আগুস্ট হানিং এর প্রতি আস্থা প্রকাশ করে৷
জার্মান সরকারের সহকারী মুখপাত্র টমাস শ্টেগ গতকাল বার্লিনে বলেন, উরলাউ এবং বর্তমান স্বরাষ্ট্র-সচিব হানিং এর ওপর রয়েছে সরকারের পূর্ণ আস্থা৷ তবে এই ঘটনার ওপর গোপন রিপোর্ট প্রকাশের পরিকল্পনাটি সমালোচিত হচ্ছে৷ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াই এ গুপ্তচর সংস্থার তত্ পরতা বিষয়ক মধ্যস্থতা কমিটির চেয়ারম্যান জিগফ্রিড কাউডার সাবধান করে দিয়ে বলেন, এতে বিএনডি এর ক্ষতি হতে পারে৷
জার্মানির কোয়ালিশন সরকারের ক্ষুদ্র শরীক দল সিএসইউ এর হান্স-পেটার উল বলেন, সংস্থা যদি সহ-সাংবাদিকদের ওপর গুপ্তচর-বৃত্তি চালানোর জন্য সাংবাদিক রিক্রুট করে থাকে তাহলে তা হল আইন বিরোধী এবং সংবিধান পরিপন্থী৷ তিনি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান৷ সবুজ দলের হান্স-ক্রিশ্চিয়ান শ্ট্রবেলেও ঘটনাটি সঠিকরূপে পরীক্ষা করার আহ্বান জানান৷
সংবাদ সাময়িকী Der Spiegel লিখেছে, একাধিক যুদ্ধাঞ্চলে কাজ করেছে এমন একজন ফ্রিলান্স সাংবাদিক বিএনডিকে তথ্য সরবরাহ করেছে আর একটি সংবাদ সাময়িকী ফোকুস এর সাংবাদিকদের সম্পর্কে৷
এদিকে, জার্মানির বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা- বিএনডি স্বীকার করেছে যে, তারা ভুল করেছে৷ এতে পরোক্ষভাবে এটাই প্রমাণিত হল যে, সংস্থাটি জার্মান সাংবাদিকদের ওপর গোয়েন্দাগিরি করেছে সহ-সাংবাদিক রিক্রুটের মাধ্যমে৷ বিএনডি এর সাবেক প্রধান ফল্কার ফ্যোর্টশও স্বীকার করেছেন যে, মাঝে মাঝে সাংবাদিকদের ব্যবহার করা হয়েছে ইনফর্মার হিসেবে৷
জার্মানির কিছু প্রভাবশালী পত্রিকার সাংবাদিকরাও স্বীকার করেছেন যে, তাঁরা বিএনডি এর জন্য কাজ করেছেন এবং তথ্য পাচার করেছেন অন্যান্য পত্রিকার সাংবাদিকদের সম্পর্কে৷
সাংবাদিকদের গুপ্তচর বৃত্তির কাজে লাগানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা জার্মানিতে রাজনৈতিক আলোড়ন তুলেছে৷ স্পর্শকাতর এই ঘটনাটি হল জার্মানির যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার অথবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার লংঘন৷
ডিজিএসই (ফ্রান্স)
প্রতিষ্ঠা : ২ এপ্রিল, ১৯৮২, পূর্ববর্তী সংস্থা : বৈদেশিক তথ্য সংগ্রহ এবং গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী : গেরাল্ড ল্যাঙ্গুয়েট, প্রতিরা মন্ত্রণালয়
এজেন্সি নির্বাহী : ইরার্ড করবিন ডি ম্যানগ্রক্স, পরিচালক
ফ্রান্সের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম ডাইরেক্টরেট জেনারেল ফর এক্সটারনাল সিকিউরিটি (ডিজিএসই)। সংস্থাটি ফ্রান্সের প্রতিরা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। বিদেশে গুপ্তচরবৃত্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা, বিশেষ করে আধা সামরিক ও প্রতিপরে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা ডিসিআরআইয়ের (দ্য সেন্ট্রাল ডাইরেক্টরেট অব ইন্টেরিয়র ইন্টেলিজেন্স) পাশাপাশি কাজ করে। ইউরোপের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় ফ্রান্সের ডিজিএসইর ইতিহাস অনেক সংপ্তি। দেশটির কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যদের নিয়ে ১৯৮২ সালে এটি গঠিত হয়। দেশের সামরিক ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে বিদেশী সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহই তাদের প্রধান কাজ। সংস্থাটিতে পাঁচ হাজারের বেশি লোক কাজ করে।
আরএডব্লিউ (ভারত)
প্রতিষ্ঠা : ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮
সদর দফতর : নয়াদিল্লি, ভারত
এজেন্সি নির্বাহী : সঞ্জীব ত্রিপাঠি, সচিব
প্যারেন্ট এজেন্সি : প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
ভারতের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)। স্বাধীনতার অল্প পরেই ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধ এবং ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রোপটে ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি গঠন করা হয়। ওই দু’টি যুদ্ধেই প্রমাণিত হয় যে, দেশটির নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যে মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। সংস্থাটির প্রধান কাজ হলো বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, সন্ত্রাস প্রতিরোধ এবং গোপন অভিযান পরিচালনা। এ ছাড়া ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিতে বিদেশী সরকার, সংস্থা ও ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণও তাদের দায়িত্ব। র সৃষ্টির আগে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) একাই অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক গুপ্তচরবৃত্তির কাজটি করত।
এএসআইএস (অস্ট্রেলিয়া)
প্রতিষ্ঠা : ১৩ মে, ১৯৫২, সদর দফতর : ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া, বার্ষিক বাজেট : ১৬২.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (২০০৭), দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী : স্টিফেন স্মিথ এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এজেন্সি নির্বাহী : নিক ওয়ার্নার, মহাপরিচালক।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার নাম অস্ট্রেলিয়ান সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস। এই সংস্থার দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক গুপ্তচরবৃত্তি, প্রতিপরে গুপ্তচরবৃত্তি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সহযোগিতা করা। এর মূল কাজ প্রধানত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো। বিশাল এলাকাজুড়ে তাদের এজেন্ট রয়েছে।
পাকিস্তান ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স_সংক্ষেপে আইএসআই।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা। উপমহাদেশের অঘটনঘটনপটীয়সী হিসেবে পাকিস্তানে নন্দিত এবং বহির্বিশ্বে নিন্দিত। অনেক ষড়যন্ত্র-দুর্ঘটনার কথা উঠলেই তর্জনী সংকেত নির্দেশ করে এ সংস্থাকে। পরিবারের অবাধ্য সদস্যের মতো। পরিবারের মধ্যে অবস্থান করে এবং পরিবারে খেয়েও পরিবারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে, অন্য সদস্যদের হত্যা করে। বহির্দেশের কথা তো ভিন্ন। উপমহাদেশের কূটিল ষড়যন্ত্র, ক্যু, গুপ্তহত্যা, জঙ্গি তৎপরতার পৃষ্ঠপোষক ও সহায়ক আইএসআই। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি হত্যা-নির্যাতন, মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিবেশে গুপ্তচর অনুপ্রবেশ করানো, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র প্রেরণ, কাশ্মীরী যোদ্ধাদের সক্রিয় সহায়তা দেওয়া, বাংলাদেশে 'মুসলিম বাংলা' ব্লুপ্রিন্টের প্রণেতা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালনকারী, বাংলাদেশে ক্যু-বেআইনি শাসন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় সহায়তা দেওয়া, বাংলাদেশে জঙ্গি অর্থায়ন-প্রশিক্ষণ, আফগানিস্তানে আল-কায়েদা শাসন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় সহায়তা দেওয়া, বাংলাদেশে জঙ্গি অর্থায়ন-প্রশিক্ষণ, আফগানিস্তানে আল-কায়েদা শাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রতিপালন, খোদ পাকিস্তানে সামরিক শাসন ও জঙ্গি তৎপরতার মদদদাতা এই আইএসআই। সম্প্রতি খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষ্যে এখনো আল-কায়েদার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা এবং লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার কথা উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রেও এ চরিত্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। সিআইএ নামের সংস্থাটি বিশ্বে বহুল সমালোচিত। ১৮ বার ফিদেল কাস্ত্রোর প্রাণনাশের চেষ্টাসহ বহু রাষ্ট্রনায়ক হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে সিআইএর বিরুদ্ধে। সিআইএর কয়েকজন সাবেক অধিনায়ক এসব কথা বলেছেন।
অতিসম্প্রতি বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘ বেনজির হত্যাকাণ্ড বিষয়ে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে রাখঢাক না করেই বলা হয়েছে, বেনজির হত্যার বিষয়টি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের জানা ছিল। ফলে সেনা, পুলিশ, গোয়েন্দা_সবাই দূরে দূরে সরে ছিল। দায়িত্ব পালন করেনি। দায়িত্ব পালনের চেষ্টাও করেনি। নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করলে হত্যাক্যাণ্ড এড়ানো সম্ভব ছিল বলেও মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে। একই কারণে অর্থাৎ সরকারি সংশ্লিষ্টতার জন্য তদন্তে অগ্রগতি হয়নি। বিশ্লেষণ করলে অর্থ দাঁড়ায়, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোশাররফ বেনজিরের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তাঁকে হত্যা করিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র কার্যকর করার দায়িত্বে থাকে গোয়েন্দা সংস্থা। এ ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আইএসআই। রাষ্ট্রের অবাধ্য এ সংস্থার ওপর বৈধ সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই। কারণ, সংস্থার মধ্যে ষড়যন্ত্রের এজেন্টরা অর্থ-প্রতিপত্তির বিনিময়ে এমনভাবে প্রবিষ্ট থাকে যে তাদের শনাক্ত করা কষ্টকর। বহিষ্কার করা আরো দুষ্কর। কার্যত এরাই সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে।
মজার ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বসংস্থা আজ এসব কথা উচ্চারণ করলেও, আইএসআইর দৈত্যরূপ গ্রহণের অর্থদাতা, প্রশিক্ষণদাতা ও সহায়ক শক্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ। আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীকে পর্যুদস্ত করার জন্য আইএসআইকে সম্পূর্ণভাবেই ব্যবহার করেছে সিআইএ। পাকিস্তানের আঞ্চলিক দানব হিসেবে সজ্জিত করেছে সিআইএকে। মানব থেকে দানবে রূপান্তর সম্ভব হলেও, দানব থেকে মানবে রূপান্তর সম্ভব নয়। তাই আইএসআই দানবই রয়ে গেছে। বিপুল হিংস্র ক্ষুধার তাড়নায় খোদ পাকিস্তানকেই খেয়ে ফেলতে উদ্যত। এ দানবের প্রতিটি লোমকূপ থেকে জঙ্গির জন্ম। জঙ্গি আক্রমণে পাকিস্তান আজ বিধ্বস্ত। এমন একটি দিনও যায় না, যেদিন পাকিস্তানের কোনো না কোনো স্থানে জঙ্গি হামলা বা গুলি-বিস্ফোরণে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি না ঘটে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও আক্রান্ত হচ্ছে জঙ্গিদের দ্বারা। শর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে ভূত তাড়াবে কে? যুক্তরাষ্ট্রের বোধোদয় ঘটেছে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হওয়ার পর। এখন জঙ্গিরোধে তারা আফগানিস্তানে হাজির। পাকিস্তানেও হাজির। যুক্তরাষ্ট্র হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে, ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বানানো কঠিন কিছু নয়_কিন্তু বশে আনা, বশে রাখা ও নিয়ন্ত্রণ করা অসাধ্য কাজ। ধ্বংস করাও দুঃসাধ্য। এ জন্যই বাঙালি মনীষীরা বলেছেন, 'ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের অপকর্মের জন্য আরো কতকাল এবং কত বেশি খেসারত দিতে হবে, তা ভুক্তভোগী বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করতে থাকবে। আইএসআইকে বশে আনার অনেক চেষ্টাই পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সরকার করেছে এবং করছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল : (ক) প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা, (খ) সেনাবাহিনীর মধ্যে গোয়েন্দাগিরির কাজকেই তাদের মুখ্য কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, (গ) কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স জোরদার করা, (ঘ) আইএসআইর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব পরিবর্তন করে, অভ্যন্তরীণ সংস্কার আনা। কিন্তু পদক্ষেপগুলো কতটুকু ফলপ্রসূ হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। সেই সঙ্গে সিআইএ তাদের ছত্রছায়া অনেকটাই তুলে নিয়েছে জঙ্গি তৎপরতার কর্মে। তার পরও মার্কিন কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্য ধারণা, আইএসআই এখনো জঙ্গি মদদদাতার ভূমিকা থেকে মুক্ত নয়।
0 comments:
Post a Comment